কয়েক টুকরো আগুনকুচি ,
একথালা রোদ , আর এক আঁচল অনামি বুনোফুল …
যৎসামান্য এই উপকরণ দিয়ে নৈবিদ্য সাজিয়েছি নারীজন্মের ॥
আপেলকুচিবাটা মুখে মেখে প্রেমিকের জন্য উজ্জ্বল সুন্দরী হয়েছিলো যে মেয়েটা ওকে গতকাল দেখলাম খেলার মাঠে গোলপোস্টের পাশে পায়ে ফুটবল জড়িয়ে বসে আছে , শেপ করা নখ দিয়ে খুঁটে তুলে ফেলেছে সারা দেহের আতিশয্য , রিমুভার দিয়ে নেলপালিশ তুলে হাতদুটোতে মেখেছে প্রতিজ্ঞার গ্লাভস , ফিরে গেছে ও ওর সহজাত জীবনে ,
নিজস্ব যে চরিত্র মায়ের গর্ভে থাকাকালীন ও ঘষে ঘষে মিশিয়েছিলো রক্তে , জাগতিক এই দুনিয়ায় প্রবেশের কিছু সময় পরই তাতে “নিষিদ্ধ ” নোটিশ ঝোলায় সমাজ নামের বোর্ড !
না , মেয়েদের ফুটবল বুঝতে নেই , পা ছোঁয়ানো তো দূর কি বাতে , ওদের জন্য বিবাহ পূর্বক “রান্নাবাটি খেলা” ইতিহাস বইয়ের প্রচ্ছদের মতোই সত্যি !
এভাবেই মেয়েটার ক্যারেক্টারের ওপর সযত্নে কাটাকুটি খেলতে শুরু করেছিলো সমাজ, ব্যাথার জল গলনাংকে পৌঁছে একসময় বরফও হয়ে গিয়েছিলো , ঠিক এমন সময় একটা বেকার একরোখা বদমেজাজী উস্কোখুস্ক চুলের ছেলে এলো মেয়েটার বৃত্তে , দগদগে ঘায়ের ওপর আলতো হাত বোলাতে বোলাতে সহনীয় আঙ্গুলে শুকনো চামড়াটা টেনে ছিঁড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিলো পৃথিবী সীমারেখার বাইরে । তারপর স্পর্শের বাষ্পে ঠোঁট ভিজিয়ে প্রতিদিন চুমু আঁকতো সাদা রংয়ের জলরঙে !
এমনভাবে চলতে চলতে কখন যেন সাদামাটা ওই মেয়েটার গোটা শরীর ঝাঁ চকমকে গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড হয়ে গেছে , ছেলেটা আজ বন্ধুত্বের ডিগ্রি কমপ্লিট করে মেয়েটার জগতে প্রেমিক নামের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর !
আজ আর হাফপ্যান্ট-টাইটগেঞ্জি-স্পোর্টসু জনিত ফুটবল নিয়ে সমাজের কোনো চকমকানি চোখঝাঁঝানি নেই , পুরুষ প্রেমিক নিথর মেয়েটার বাগযন্ত্রে ভরে দিয়েছে স্বরধ্বনি …
এখন প্রতিদিন মেয়েটা ভোরে উঠে খড় আর কাদামাটি গুলে ছাঁচে ফেলে স্বপ্রতিবিম্ব
তারপর সূর্যের দম্ভে কাঠামো পুড়িয়ে মূর্তি গড়ে !
ঈশ্বর প্রতিক্ষণ নগ্ন হন প্রতিজ্ঞার কাছে ,
মেয়েটির নাম তাই ” প্রতিশ্রুতি